রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরকে অবজ্ঞা করে একের পর এক তুঘলকি সিদ্ধান্ত নিলে চলেছেন খোয়াই জেলা হাসপাতালের এমএস মৃদুল দাস। নিজের খেয়াল খুশি মত স্বাস্থ্য বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যা খুশি তুঘলুকি ফরমান চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।খোয়াই জেলা হাসপাতালের দেওয়ালে কান পাতলেই শোনা যায় একেক সময় ওনার এক এক রকমের নয়া নয়া ফরমানগুলি। চলতি মাসের ৭ তারিখ হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এখন থেকে সপ্তাহে বুধবার এবং শনিবার খোয়াই জেলা হাসপাতালে লোয়ার সেগমেন্ট সিজারিয়ান সেকশন (LSCS) করা হবে। মানে গর্ভবতী মায়েদের সপ্তাহে দুদিন সিজার হবে। বাকিদের আগরতলা রেফার করার নির্দেশিকা জারি করেন তিনি। কিন্তু প্রশ্ন হল যদি কোন গরিব সিরিয়াস গর্ভবতী মা যাকে আগরতলাতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় তার সিজার করানো কিভাবে সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে শিশু এবং মায়ের প্রাণ হানিও ঘটতে পারে। নোটিফিকেশনে মৃদুল দাস এই ব্যাপারে কোন স্পষ্ট করণ দেননি। এরকমই এক অত্যন্ত গরিব গর্ভবতী মা এই ফরমান বের হওয়ার পর তার সিজার করা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই বিষয়টি নিয়ে খোয়াই জেলা হাসপাতালের গাইনোকোলজিস্ট অর্ঘমাল্য দেববর্মাকে প্রশ্ন করা হলে আরেক বিশিষ্ট ডাক্তার বিশ্বজিৎ দেববর্মা কে পাশে নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সাফ জানান, খোয়াই বাসীর স্বার্থে বিশেষত গরিব অংশের যারা রয়েছেন তাদের স্বার্থে এই ধরনের নোটিফিকেশন সাইডে রেখে পরিষেবা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। এতে করে উনাদের শাস্তিও হতে পারে। কিন্তু কিছু করার নেই। গরিব অংশের মানুষ যাবে তো যাবে কোথায়। অনেকের পক্ষে আগরতলায় নিয়ে গিয়ে সিজার করানো সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে খুব আপদকালীন রুগিও আসে। তাদের বিষয় নিয়েও এখানে কোন উল্লেখ নেই। তাই বাধ্য হয়ে আমরা এই ধরনের নোটিফিকেশন এক সাইডে রেখে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে গাইনোকোলজিস্ট অর্ঘ্যমাল্য দেববর্মা জানান। উল্লেখ্য খোয়াই জেলা হাসপাতালের মেডিকেল সুপার হিসেবে মৃদুল দাস দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে একের পর সিদ্ধান্ত নিয়ে মর্জি মাফিক ফরমান জারি করে চলেছেন প্রতিনিয়ত।এম এস এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ উঠে আসছে। তার এই ধরনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চিকিৎসক থেকে শুরু করে খোয়াই জেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীরা। নিজের খেয়াল খুশি মতো ফরমান চালিয়ে যাচ্ছেন বলে হাসপাতালের অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়। এর আগেও হাসপাতালের তিনটি ইমারজেন্সি গেটের মধ্যে দুটিগেইট নিজের ইচ্ছানুসারে বন্ধ করে দেন তিনি। উনার অভিমত রাত্রিকালীন সময়ে ভেতরে নেশা সেবনকারীদের আনাগোনা থাকে তাই বিকেল পাঁচটার পর এক ফরমান জারি করে তিনটির মধ্যে দুটি গেইট বন্ধ করে দেন পরের দিন সকাল ছয়টা পর্যন্ত। এতে করে জরুরী পরিষেবায় যারা হাসপাতালে আসেন রোগী নিয়ে তাদের মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হয়। এম এস এর এই ধরনের অনৈতিক ফরমান জারি করার ফলে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী সহ গোটা খোয়াই বাসি।