ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরীক্ষার ছয়টি ক্যাটাগরিতে ফি বৃদ্ধি : পর্ষদ সভাপতি
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা ৯ অক্টোবর :
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রভাব এবার পড়ল শিক্ষাক্ষেত্রেও। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ডঃ ধনঞ্জয়গণ চৌধুরী জানান, পরীক্ষার ফি-সহ মোট ছয়টি ক্যাটাগরিতে ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি জানান, আগামীকাল থেকেই নতুন ফি কাঠামো কার্যকর হবে। মাধ্যমিক স্তরে আগে পরীক্ষার ফি ছিল ১৩০ টাকা ও ভোকেশনাল (প্র্যাকটিক্যাল) ফি ৭৫ টাকা, মোট ২০৫ টাকা। এখন পরীক্ষার ফি বেড়ে হয়েছে ৩০০ টাকা — অর্থাৎ মোট ফি দাঁড়িয়েছে ৩৭৫ টাকা।
উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পরীক্ষার ফি ১৬০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০০ টাকা করা হয়েছে। প্রতিটি প্র্যাকটিক্যাল বিষয়ে ৭৫ টাকা ফি দিতে হবে। ফলে চারটি প্র্যাকটিক্যাল বিষয় থাকলে একজন ছাত্রছাত্রীকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত ফি দিতে হবে।
বোর্ড রেজিস্ট্রেশন ফি-তেও পরিবর্তন এসেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক উভয় ক্ষেত্রেই রেজিস্ট্রেশন ফি ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ২১০ টাকা হয়েছে।
পর্ষদ সভাপতি জানান, মোট ছয়টি ক্যাটাগরিতে ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে —
-
আবেদনপত্র ফি
-
রেজিস্ট্রেশন ফি
-
প্র্যাকটিক্যাল ফি
-
সেন্টার ফি
-
রিভিউ ফি
-
পরীক্ষার ফি
রিভিউয়ের ক্ষেত্রেও বাড়তি চাপ পড়েছে। আগে খাতা রিভিউ ফি ছিল ১৩০ টাকা এবং নিজে খাতা যাচাই করতে চাইলে আরও ২৫০ টাকা দিতে হতো। এখন এই ফি বেড়ে যথাক্রমে ২০০ ও ৫০০ টাকা হয়েছে।
ডঃ চৌধুরী জানান, “দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই ফি বাড়ানো হয়েছে।” তিনি আরও জানান, ২০২৬ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হবে এবং ১৫ নভেম্বর থেকে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা চলবে।
তবে এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগী মহল। তাদের বক্তব্য, অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা রাজ্যে এমন ফি বৃদ্ধি ছাত্রছাত্রীদের জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
শিক্ষা মহলের প্রশ্ন —
“ডাবল ইঞ্জিনের সরকারে কি শিক্ষা ক্ষেত্রে সত্যিই অর্থাভাব দেখা দিয়েছে? আর এই ফি বৃদ্ধি কি গরিব ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্কুলছুট হওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়াবে না?”
ত্রিপুরা একসময় ‘পূর্ণসাক্ষর রাজ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। এখন সেই সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখা প্রশাসনের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।