বিয়ের পিঁড়ি থেকে পালালো রাষ্ট্রবাদী জিনিয়াস! মহিলা পুলিশ পেটালো নির্যাতিতার মাকে
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ আগস্ট :
মহিলা সুরক্ষার নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মহিলা থানা। কিন্তু বাস্তবে এই থানাগুলিতেই নির্যাতিত নারীরাই আবারও লাঞ্ছিত হচ্ছেন। রাজধানী আগরতলা থেকে শুরু করে জেলার প্রত্যন্ত মহকুমা—চিত্র এক। মাস শেষে মোটা বেতন, তার উপর নানা উপরি আয়ের সুযোগে “দিদিমনিদের” ভরসা কোথায় গড়াচ্ছে, প্রশ্ন তুলছে জনমত।
এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটলো শুক্রবার। প্রতারণার শিকার এক তরুণীর অভিযোগ জানাতে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মুখে পড়লেন তাঁর মা—সরাসরি মহিলা পুলিশের হাতে!
প্রতারণার অভিযোগে শাসকঘনিষ্ঠ যুবক
বাধারঘাটের শাসকদল ঘনিষ্ঠ যুবক দ্বীপ সুর দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ও উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের আশীর্বাদ পর্যন্ত সম্পন্ন করেন। কিন্তু হঠাৎ বিয়ের আসর থেকেই পিছু হটলেন তিনি। প্রতারিত প্রেমিকা গৌরী দাস ও তাঁর মা ন্যায় চাইতে থানায় গেলে উল্টে পুলিশের অপমান সহ্য করতে হলো তাঁদের।
অভিযোগ, আমতলী থানার মহিলা এসআই সুস্মিতা দেবী প্রকাশ্যে এক অপমানজনক আচরণ করেন—যুবতীর মাকে পুরুষ পুলিশের সামনেই ব্লাউজ খোলার নির্দেশ দেন। এতে অপমানিত হয়ে মা–মেয়ে থানার সামনে বসে প্রতিবাদে সামিল হন।
থানায় থানায় ঘুরেও বিচার নেই
গৌরী দাস ও তাঁর মা পশ্চিম মহিলা থানাতেও লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু সেখানেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। উল্টে তাঁদের জানানো হয়েছে—“অভিযুক্ত নাকি পলাতক।” অথচ নির্যাতিতা পরিবার দাবি করছে, দ্বীপ দিব্যি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে।
বড় প্রশ্ন, যখন আমতলী থানার ওসি পরিতোষ দাস, তখন পশ্চিম মহিলা থানার ওসি তাঁর স্ত্রী শিউলি দাস। ফলে ন্যায়বিচারের বদলে গোপন আঁতাতের অভিযোগ উঠছে স্বাভাবিকভাবেই।
আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি
অসহায় গৌরী দাস থানার সামনেই দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দেন—“অভিযুক্তের শাস্তি না হলে আমি প্রকাশ্যে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করবো।” ইতিমধ্যেই তাঁর মাতৃপল্লীর বাড়িতে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
প্রশ্নের মুখে সুশাসনের দাবিদাররা
এখন রাজ্যজুড়ে প্রশ্ন উঠছে—
-
থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে নারীদের কি ভয় দেখানো হবে?
-
প্রতারিত তরুণীর কান্না শোনার কেউ নেই?
-
রাজ্য মহিলা কমিশন কি কোনো পদক্ষেপ নেবে?
-
মানবাধিকার কমিশন কি নীরব দর্শক হয়ে থাকবে?
-
আর মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারিত “সুশাসন” কি এভাবেই বাস্তবায়িত হচ্ছে?
শাসকদলের একাংশ নেতাকর্মীর একের পর এক নারী–সংক্রান্ত ঘটনায় জড়িয়ে পড়া নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে সাধারণ মানুষ। নাগরিক সমাজ প্রশ্ন তুলছে—“এই কি তবে মন্ত্রী বাহাদুরের জিনিয়াস বাহিনী?”