ভিলেজ ভোট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রদ্যোত মাণিক্য
ত্রিপুরার রাজনীতিতে ফের নতুন মোড়। রাজ্যের স্বশাসিত জেলা পরিষদ (TTAADC)-এর অধীন ভিলেজ কমিটি নির্বাচন নিয়ে এবার সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তিপরা মথা প্রধান প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা।
প্রদ্যোত জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বি.আর. গভাই এবং বিচারপতি এন.ভি. অঞ্জারিয়ার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে এই মাসের ২৭ বা ২৮ অক্টোবর। আদালতের এই পদক্ষেপে ভিলেজ ভোট নিয়ে চলা বিতর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।
দীর্ঘ বিলম্বে ক্ষোভ তীব্র
২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ ভিলেজ কমিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালে। তবে, করোনা পরিস্থিতির অজুহাতে নির্বাচন স্থগিত রেখে আজও ভোট হয়নি।
হাই কোর্ট ছয় মাসের মধ্যে ভোটের নির্দেশ দিয়েছিল, তবুও রাজ্য সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এই প্রেক্ষিতেই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়।
প্রদ্যোতের অবস্থান ও রাজ্যের দ্বন্দ্ব
প্রদ্যোত দেববর্মা বলেছেন, “ভিলেজ কমিটির ভোট না হওয়া গণতান্ত্রিক ভারতের ইতিহাসে দীর্ঘতম বিলম্বগুলির একটি।”
তিপরা মথা বারবার অভিযোগ করেছে—রাজ্য সরকার এডিসি এলাকায় বসবাসকারী তিপ্রাসা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করছে।
তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে, প্রদ্যোত একদিকে সরকারে শরিক, আবার অন্যদিকে সেই সরকারের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। এতে শাসক জোটের মধ্যকার অস্বস্তি আরও প্রকট হয়েছে।
পাহাড়ের বাস্তব চিত্র
রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় এখনো কাচা জল, অচল রাস্তা, শিক্ষক ও চিকিৎসকের অভাব, বেকারত্ব—সবই নিত্যদিনের সমস্যা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, “ভিলেজ ভোট নিয়ে এই টানাপোড়েন প্রকৃতপক্ষে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের চেয়ে রাজনৈতিক স্বার্থে ক্ষমতা ধরে রাখার কৌশল মাত্র।”
উপসংহার
ত্রিপুরার মতো ছোট রাজ্যে একটি ভিলেজ কমিটি নির্বাচন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত মামলা—এ এক বিরল ঘটনা।
এখন সকলের নজর ২৭-২৮ অক্টোবরের দিকে, যখন দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এই গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি হবে।