এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের আর্তনাদ: মিষ্টি ব্যবসায়ীর হাতে ন্যায়চ্যুত এক জীবন
সোমবার রাতটা ছিল এক ভয়ানক অভিজ্ঞতার সাক্ষী। বনকর বাজারে ঘটে গেল এমন এক নির্মম ও অমানবিক ঘটনা, যা প্রশ্ন তোলে – “আমরা কতটা মানবিক?” যেখানে সমাজের সবচেয়ে দুর্বল, অসহায় একজন মানুষ—একজন মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক—আক্রান্ত হলেন এক ব্যবসায়ীর হিংস্রতায়।
ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টা। বনকর বাজারের মিষ্টি দোকানদার অর্জুন দেবনাথ তার দোকানে উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ, মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক নিতাই দেবনাথ (ডাকনাম আবু) নাকি তাকে গালাগালি করেছিলেন। এরপর দোকান থেকে বেরিয়ে অর্জুন দেবনাথ ওই যুবককে মারধর শুরু করেন।
নিতাই প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালাতে গেলে পিছন থেকে অর্জুনও তাড়া করেন। পালাতে গিয়ে নিতাই একটি অটো রিকশার সাথে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়েন। মাথা, চোখ ও মুখে গুরুতর আঘাত পান তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে প্রথমে বিলোনিয়া মহকুমা হাসপাতালে এবং পরে শান্তিরবাজার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
মানবিকতা কোথায় হারাল?
ঘটনার সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো—একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি, যাঁর মা-বাবা, ভাই-বোন কেউ নেই, তিনি একা, অসহায়। তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন ও মানসিক হেনস্তা নিঃসন্দেহে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু এই ঘটনা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির উপর অত্যাচার নয়, এটি আমাদের সমাজের বিবেকের উপরও এক আঘাত।
সাংবাদিকদের প্রতিও হুমকি: সত্য চাপা পড়বে না
যখন সাংবাদিক রকি পাল ঘটনাটি তদন্ত করতে অর্জুন দেবনাথের কাছে যান, তখন তিনিও ও তাঁর সহকর্মী দুর্ব্যবহারের শিকার হন এবং মারধরের হুমকি পান। এ ধরনের আক্রমণ গণতন্ত্র ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতার উপরও আঘাত।
সমাজের প্রশ্ন – প্রশাসন কি জবাব দেবে?
-
কেন একজন অসহায়, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি এত সহজে নিগৃহীত হবেন?
-
কেন এমন অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয় না?
-
যেখানে পরিবার নেই, সেখানে কি প্রশাসন অভিভাবকের ভূমিকা নেবে না?
এই প্রশ্নগুলো আজ বনকর বাজারের প্রতিটি নাগরিকের হৃদয়ে।
একটি সমাজ তখনই সভ্য, যখন সে তার দুর্বলতম সদস্যের পাশে দাঁড়াতে পারে।
আমাদের দাবি,
👉 অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ হোক।
👉 আহত যুবকের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব প্রশাসন নিক।
👉 সাংবাদিকদের হুমকির ঘটনাও তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
মানবতা এখন পরীক্ষার মুখে। আপনি কি পাশ করবেন?
এই ব্লগ আপনার মনে দাগ কাটলে শেয়ার করুন। আওয়াজ তুলুন। যেন আর কোনো আবু এইভাবে আহত না হয়, যেন আর কোনো সত্য চাপা না পড়ে।