কংগ্রেস এবং সিপিআইএম মিলে আবারও পঞ্চায়েত দখল করে কৈলাসহরের ইছবপুরে!
রাজ্য রাজনীতিতে বর্তমানে কংগ্রেস এবং সি.পি.আই.এম এই দুই দলের মধ্যে মিল না থাকলেও কৈলাসহর এক বিপরীত চিত্র দেখা গেলো। কৈলাসহর মহকুমায় কংগ্রেস এবং সি.পি.আই.এম দুই দল মিলে আবারও একটি গ্রাম পঞ্চায়েত পুনরায় দখল করে। ঘটনা কৈলাসহরের গৌরনগর ব্লকের অধীনস্হ ইছবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। এগারো আসন বিশিষ্ট ইছবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ২০২৪সালের পঞ্চায়েত ভোটে কোনো রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠ না পাওয়ায় কেউ পঞ্চায়েত দখল করতে পারেনি। এগারো আসনের মধ্যে বিজেপি পাঁচটি আসনে এবং সি.পি.আই.এম দলও পাঁচটি আসনে এবং কংগ্রেস দল একটি আসনে জয়লাভ করেছিলো। পরবর্তী সময়ে কংগ্রেস এবং সি.পি.আই.এম দুই দল মিলে পঞ্চায়েত গঠন করে সি.পি.আই.এম দলের পঞ্চায়েত সদস্য মনোজ পালকে প্রধান এবং কংগ্রেস দলের পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল কালামকে উপ প্রধান করা হয়েছিলো। প্রাথমিকভাবে পঞ্চায়েত ভালো ভাবে চললেও বিগত দেড় মাস পূর্বে হঠাৎ করে বিজেপি দলের ৫জন এবং সি.পি.আই.এম দলের একজন মিলে মোট ছয়জন পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েতের প্রধান মনোজ পালের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলো। পরবর্তী সময়ে বিজেপি দলের একজন এবং সি.পি.আই.এম দলের ৫জন পঞ্চায়েত সদস্য মিলে মোট ছয়জন পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েতের উপ প্রধান আব্দুল কালামের বিরুদ্ধেও অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছিলো। দীর্ঘদিন পঞ্চায়েতে প্রধান এবং উপ প্রধান না থাকার পর ঊনকোটি জেলার পঞ্চায়েত অফিসার ডেভিড হালাম সাম্প্রতিক কালে ঘোষণা দেন যে, নয় এপ্রিল পঞ্চায়েত অফিসে আস্থা ভোট অনুস্টিত হবে। জেলা পঞ্চায়েত অফিসারের ঘোষণা অনুযায়ী নয় এপ্রিল বুধবার দুপুরে ইছবপুর পঞ্চায়েত অফিসের হলঘরে ফিসাইডিং অফিসার দীপংকর চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমে এগারো জন পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে উপ প্রধান আব্দুল কালামের বিপক্ষে বিজেপি দলের ৫জন পঞ্চায়েত সদস্য ভোট দিলেও সি.পি.আই.এম দলের ৫জন পঞ্চায়েত সদস্য উপ প্রধান আব্দুল কালামের পক্ষে ভোট দেয় এবং আব্দুল কালামের নিজের ভোট মিলে মোট ছয়টি ভোটে পুনরায় কংগ্রেস দলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল কালাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রধানের ভোটের সময় দেখা যায় সি.পি.আই.এম দল প্রধান মনোজ পালকে প্রধান প্রার্থী না করে দলের অপর পঞ্চায়েত সদস্য সন্ধ্যা রানী দেবকে প্রধান প্রার্থী করা হয়েছে। অপরদিকে, প্রধান পদে ভোটাভুটির সময় বিজেপি দলের ৫জন পঞ্চায়েত সদস্য ভোট বয়কট করে চলে যান। কিন্তু এগারো জন মোট পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে কংগ্রেস দলের একজন ও সি.পি.আই.এম দলের ৫জন সহ মোট ছয়জন পঞ্চায়েত সদস্য উপস্থিত থাকায় ভোটাভুটি হয় এবং উপস্থিত ছয়জনই প্রধান সন্ধ্যা রানী দেবকে ভোট দেন ও সন্ধ্যা রানী দেব ইছবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন বলে জানান ফিসাইডিং অফিসার দীপংকর চক্রবর্তী
অন্যদিকে, বিজেপি দলের ৫জন পঞ্চায়েত সদস্য ভোট বয়কট করার পর বিজেপি দলের পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল মুতলিব সংবাদ প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে জানান যে, পঞ্চায়েতের পূর্বের প্রধান সি.পি.আই.এম দল থেকে নির্বাচিত মনোজ পালের বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়ে খোদ সি.পি.আই.এম দলের এক পঞ্চায়েত সদস্য সোমা বেগম বিজেপি দলের ৫জন পঞ্চায়েত সদস্যদের সাথে মিলে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছিলো। সেই সোমা বেগম বিজেপি দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের বলেছিলো, নয় এপ্রিল পঞ্চায়েত অফিসে ভোটাভুটির সময় উপ প্রধান এবং প্রধানের বিরুদ্ধে বিজেপি দলের ৫জন পঞ্চায়েত সদস্যদের সাথে মিলে ভোটদান করবে। কিন্তু বাস্তবে সোমা বেগম বিজেপি দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের সাথে ভোট না দিয়ে উপ প্রধানের পক্ষে ভোটদান করায় বিজেপি দলের পঞ্চায়েত সদস্যরা প্রধানের ভোটের সময় ভোট বয়কট করেছেন। বিজেপি দলের পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল মুতলিব এও জানান যে, সি.পি.আই.এম দলের প্রধান মনোজ পাল দুর্নীতি করেছেন বলেই দল মনোজ পালকে সরিয়ে সন্ধ্যা রানী দেবকে প্রধান করেছে। তাতেই স্পষ্ট হয়ে যায় কংগ্রেস এবং সি.পি.আই.এম মিলেমিশে ইছবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে লুটপাট করছে