কৈলাশহর: মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী সেতুর উদ্বোধন

মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী সেতু

5 Min Read

কৈলাশহর মনু নদীর উপর ছনতৈল সেতুর শুভ উদ্ভোদন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার হাত ধরে

কৈলাসহর বাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হলো। রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক পূর্ত দফতরের উদ্যোগে ২০১৯ সালে কৈলাসহরের মনু নদীর উপর ছনতৈল-সোনামাড়া পাকা সেতুর কাজের সূচনা হয়েছিল। যেখানে ৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হতো সেখানে সেতু নির্মাণের ফলে আড়াই কিলোমিটার দূরত্ব কমে গিয়েছে। দশ অক্টোবর বৃহস্পতিবার এই স্বপ্নের বাস্তবায়নের সোনালী মুহূর্তে সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহাকৈলাসহর বাসীর দীর্ঘদিনের আশা পূরণ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা।কৈলাসহর ও চন্ডিপুর বিধানসভার দূরত্ব অনেকটাই কমে গেছে। বৃহস্পতিবার কৈলাসহর এসে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা প্রথমে ছনতৈল সোনামাড়া ব্রিজ উদ্বোধন করেন। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে মুখ্যমন্ত্রী দূর্গাপুর স্থিত আই.টি.আই হোস্টেল সংলগ্ন দুইশো শয্যা বিশিষ্ট যুব আবাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। যুব ও ক্রীড়া দপ্তরের অর্থানুকল্যে নির্মিত হবে এই যুব আবাস। যার ব্যয় ১৬ কোটি টাকা। সরকারি তথ্যসূত্রে জানা যায় আগামী ২৩ মাসের মধ্যে এই যুব আবাসের নির্মাণ কার্য সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি ১৬৭ মিটার এই সেতু নির্মাণ করতে ব্যায় হয়েছে প্রায় ২২ কোটি টাকা।মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী টিংকু রায়,জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, জেলা পরিষদের সদস্য বিমল কর,ত্রিপুরা ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মবস্বর আলী,টি.আই.ডি.সি-এর চেয়ারম্যান নবাদল বণিক,জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা, জেলা পুলিশ সুপার কান্তি জাঙ্গীর সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।এরপর মুখ্যমন্ত্রী চলে যান শ্রীরামপুর সংহতি সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির পূজার মন্ডপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে। সেতু এবং যুব আবাসের উদ্বোধনের পর অবিভক্ত উত্তর জেলার সবচাইতে বড় পূজা মণ্ডপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর সাহা। ইতালির রাজপ্রাসাদে ভারতীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া শীর্ষক ভাবনায় নির্মিত মাতৃ মণ্ডপের ফিতে কাটার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চন্ডিপুর বিধানসভার বিধায়ক তথা মন্ত্রী টিঙ্কু রায়। তিনি বলেন সকলের প্রচেষ্টায় শ্রীরামপুর সংহতি সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির উদ্যোগে সপ্তম বর্ষের এই পুজোর আয়োজন হয়েছে। কোনো ধরনের চাঁদা ছাড়াই এই পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজার দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন দুপুরে অন্য ব্যঞ্জনের ব্যবস্থা রয়েছে সকলের জন্য। মন্ত্রী শ্রী রায় ওনার স্বাগত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, চন্ডিপুর বিধানসভাই ত্রিপুরার একমাত্র বিধানসভা যেখানটায় আট হাজারেরও বেশি চা বাগান শ্রমিক এই বিধানসভায় বসবাস করে। তাদের মুখে হাসি ফোটাতে এবং তাদের আয়োজিত প্রতিটি পুজো মন্ডপে দুর্গাপূজাকে সাফল্যমন্ডিত করে তোলার জন্য চন্ডীপুর বিধানসভার যুবকর্মীরা সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছেন। তিনি বলেন আলোকসজ্জা থেকে মন্ডপ সজ্জা সমস্ত কিছুর দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন পূজা কমিটির যুব সদস্যরা। যার জন্য চন্ডিপুরের এই দুর্গাপূজা কোনো রকমের চাঁদা সংগ্রহ করেনি। নিজেদের সাবধানো সারে এই পূজার দায়িত্ব গ্রহণ করে সুদৃশ্য এই মাতৃমন্ডপ নিজেদের অর্থ বেয়ে নির্মাণকার্যে সহযোগিতা করেছেন। পাশাপাশি শারদীয় উৎসবের এই আনন্দঘন মুহূর্তে পূজায় যেন সবাই নতুন পোশাকে শামিল হতে পারেন তার জন্য মন্ত্রী টিংকু রায় এর ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাঁচ হাজারেরও বেশি গোটা বিধানসভা কেন্দ্রে বস্ত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে গরিব দুঃস্থ মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। বক্তব্য রাখতে গিয়ে সামগ্রিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা বলেন, ধর্মনগরের একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণবশত বাতিল করতে হয়েছে। তিনি বলেন সকলের প্রিয় বিধায়ক তথা সরকারের মন্ত্রী টিঙ্কু রায়ের আবেদন অগ্রাহ্য করতে পারেনি। তাই মন্ত্রীর অনুরোধে ছুটে আসতে হয়েছে চন্ডিপুরের দুর্গা পূজার অনুষ্ঠানে উদ্বোধন এবং সরকারি অনুষ্ঠানে। তিনি বলেন এই শহরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, ছনতৈন সোনামারা ব্রিজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যেখানে ৫ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হতো আজ সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে এখন আড়াই কিলোমিটার কমে গিয়েছে। পাশাপাশি তিনি বলেন যুব এবং ক্রীড়া দপ্তরের উদ্যোগে যে যুব আবাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছে তা ত্রিপুরা রাজ্যের তৃতীয়। কিছুদিনের মধ্যেই উদয়পুরের যুব আবাসের উদ্বোধন হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন এই সব কিছুই সম্ভব হচ্ছে যশস্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দুরদৃষ্টি ভাবনায়, ত্রিপুরার প্রগতি এবং উন্নতির জন্য যেভাবে তিনি সহযোগিতা করছেন ত্রিপুরাবাসী ওনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। বিরোধীদের কটাক্ষ করতে গিয়ে তিনি বলেন কুচক্রীরা সবসময়ই সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের বিরোধিতা করবে এবং চক্রান্তের সৃষ্টি করবে। কিন্তু এই সরকার সমস্ত সমস্যার সমাধান করে এবং সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে প্রতিহত করে উন্নয়নের বিজয়কেতন উড়াবে। নরেন্দ্র মোদির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই রাজ্যে একাধিক ন্যাশনাল হাইওয়ে ইন্টারনেট পরিষেবা এবং বিমানবন্দরের উন্নতিকরনের মধ্য দিয়ে এ রাজ্যের চেহারা পাল্টে গেছে। তার সাথে সাথে পর্যটনের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন রাজ্যের পর্যটনের উন্নয়ন দ্রুত গতিতে হচ্ছে

 

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version