বিজয়াদির আগমন যেমন আনন্দ বয়ে আনে, তেমনি মাটির প্রদীপের মতো প্রচলিত কুটির শিল্পে ম্লানতার সুরও শোনা যায়। একসময় মাটির প্রদীপই ছিল বাঙালির আলোর উৎসবের প্রধান উপকরণ। প্রতিটি পুজো মণ্ডপ, ছাদ, উঠোন—সবখানে প্রদীপের কোমল আলো ভক্তিভরে জ্বলে উঠত।
কিন্তু আধুনিক প্রযুক্তি ও এলইডি লাইটের দাপটে মাটির প্রদীপের চাহিদা ক্রমশ কমছে। শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র এখন ঝলমলে টুনি লাইটের ছায়া। তবুও, নন্দননগরের মৃৎশিল্পীরা প্রজন্মের ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য দিনের পর দিন মাটির প্রদীপ তৈরি করছেন।
স্থানীয় শিল্পীদের বক্তব্য, বছরের এই সময়টাই তাঁদের প্রধান উপার্জনের মৌসুম। তবে বিদেশি সস্তা বাল্ব ও এলইডির কারণে বাজারে ন্যায্য দাম পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। উৎপাদন খরচ বাড়ছে, কিন্তু লাভ কম থাকলেও তাঁরা ঐতিহ্য রক্ষায় লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রবীণ কারিগরদের স্মরণ, “একসময় পুরো পরিবার মিলে দিন-রাত খেটেছি। চাকা ঘোরাতাম, মাটি কাটতাম, চুল্লিতে পোড়াতাম। এখন সেই রোদের আলো আর নেই। ক্রেতা কমেছে, মণ্ডপে চাহিদা কমেছে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিল্পীদের সঠিক পারিশ্রমিক নিশ্চিত করা ও দেশীয় পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করা জরুরি, না হলে এই অনবদ্য শিল্পের ভবিষ্যৎ ম্লান হবে। প্রকৃত অন্ধকারের উপর আলো জ্বালিয়ে ধরে রাখার একমাত্র পথই হলো ঐতিহ্য রক্ষা ও বাজারে সমর্থন।