বাজেটে ঘোষণাই সার, পরিকাঠামো খাতে খরচ করতে পারছে না কেন্দ্র
হাতে মাত্র ছ’মাস। অথচ পরিকাঠামো খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় প্রায় কিছুই হয়নি। এমনকী গত আর্থিক বছরে যে ব্যয় হয়েছিল, তার থেকেও ২০ শতাংশ কমে গিয়েছে। পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে ব্যয় করার অর্থ হল সড়ক, সেতু, রেলপথ, বন্দর নির্মাণ। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী এই পরিকাঠামো উন্নয়নের ব্যয় যথাযথ হয়নি। অথচ এই বছর প্রথমে ভোট অন অ্যাকাউন্ট এবং পরে বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অথবা প্রধানমন্ত্রী দফায় দফায় দাবি করেছেন, সাড়ে ১১ লক্ষ কোটি টাকা পরিকাঠামো খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। যা রেকর্ড। এর ফলে হতে চলেছে বিপুল কর্মসংস্থান। শুধুমাত্র পরিকাঠামো খাতে এই বিপুল বরাদ্দ করার উদাহরণ দেখিয়ে বাজেটে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের বরাদ্দ। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, পরিকাঠামো নির্মাণে এত বেশি কর্মসংস্থান হবে যে, এবার আর ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের চাহিদা বেশি হবেই না। অথচ দেখা যাচ্ছে সেই পরিকাঠামো খাতে ব্যয় হচ্ছেই না। যা হচ্ছে সেটা নামমাত্র। কারণ কী? সরকারি সূত্রের খবর, রাজস্ব ঘাটতি কমানো। বছরের পর বছরে ঘাটতি বেড়েই চলেছে। আর সেটাই প্রভাব ফেলছে জিডিপি বৃদ্ধি হারের পরিসংখ্যানে। একদিকে আয় কম। ব্যয় বেশি। অন্যদিকে রপ্তানি কম। আমদানি বেশি। অর্থাৎ রাজস্ব এবং বাণিজ্য উভয় ঘাটতিই ঊর্ধ্বগামী।
পরিকাঠামো খাতে খরচে সরকার হাত গুটিয়ে রেখেছে। আবার ১০০ দিনের কাজের গ্যারান্টিতে নেই যথেষ্ট বরাদ্দ। তার উপর আবার রাজ্যে রাজ্যে বিভিন্ন কারণে ১০০ দিনের কাজের পেমেন্টও আটকে। অতএব এবার গ্রাম ও শহরে বেকারত্বের ছায়া বিপুলভাবে বাড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সময়সীমায় রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে সাড়ে ৪ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। ১২ কোটি টাকা আয়। সাড়ে ১৬ কোটি টাকা হয়েছে ব্যয়। এই রাজস্ব ঘাটতি পূরণের জন্য সরকারের বাকি প্রতিটি উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। অতএব কোপ পড়েছে পরিকাঠামো নির্মাণে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী. আগামী আর্থিক বছরে যদি ৭ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধিহারের লক্ষ্য পূরণ করতে হয়, তাহলে বাকি ৬ মাসের মধ্যে বরাদ্দ অর্থের ৪৫ শতাংশ অন্তত খরচ করতেই হবে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সেরকম কোনও উদ্যোগ এখনও চোখে পড়ছে না। যে গতিতে বলা হয়েছিল হাইওয়ে এবং গ্রামীণ সড়ক হবে, সেই অনুপাতে কোনও কাজই হচ্ছে না।