নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ অক্টোবর: রাজধানী আগরতলার সন্নিকটে অবস্থিত খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ করে পশ্চিম চম্পামুড়া ২ নম্বর ওয়ার্ডের পরিস্থিতি অত্যন্ত শোচনীয়। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েও কোনো ফল না মেলায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় বিধায়ক রতন চক্রবর্তী এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের একাংশের রাজনৈতিক কোন্দল এবং নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, খয়েরপুরের বিধায়ক রতন চক্রবর্তী, যিনি একসময় কংগ্রেসের একজন প্রবীণ নেতা ছিলেন এবং ২০১৮ সালে বিজেপিতে যোগ দেন, তিনি এবং তাঁর অনুগামীরা এলাকার উন্নয়নের চেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করতেই বেশি ব্যস্ত। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নেশার ব্যবসা, জমি কেনাবেচায় মধ্যস্থতা এবং স্বদলীয় কর্মীদের দাদাগিরির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন সময়ে সংবাদমাধ্যমেও এই সকল বিষয় প্রকাশিত হয়েছে।
পশ্চিম চম্পামুড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাস্তার গর্তে জল জমে এবং কাদায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এলাকার প্রবীণ নাগরিকরা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, ভোটের সময় নেতারা প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর তাঁদের দেখা মেলে না। বিধায়কের কাছে সমস্যার কথা জানাতে গেলে তিনি তাঁর অনুগতদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বলে অভিযোগ।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, শাসক দলের নেতারা এলাকার সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজ, যেমন—রাস্তা সংস্কার, ড্রেন নির্মাণ বা পরিষ্কার, এমনকি রেগার কাজ থেকেও কমিশন আদায় করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেও ভয় পান সাধারণ মানুষ, কারণ দলীয় কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সম্প্রতি, খয়েরপুরের যুব মোর্চা নেতা ও তাঁর স্ত্রীর একটি অডিও বার্তা এবং পরবর্তীকালে আরও একাধিক নেতা-নেত্রীর ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনায় এলাকার রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি প্রকাশ্যে এসেছে। এর ফলে, সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে জনপ্রতিনিধিদের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পশ্চিম চম্পামুড়া ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, অবিলম্বে রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়া হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।
