নতুননগরে সিপিআইএম পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে
আগরতলার নতুননগরে ফের রাজনৈতিক অস্থিরতা। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় সিপিআইএম নতুননগর পার্টি অফিসের সামনে সভার আয়োজনের আগে ঘটে যায় অপ্রত্যাশিত ঘটনা। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সভার প্রায় এক ঘণ্টা আগে হামলার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে।
হামলার ঘটনা
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিকেল আড়াইটার সময় সভার প্রস্তুতির কাজ চলছিল। ডেকোরেটর কর্মীরা মাইক সাউন্ড বসাচ্ছিলেন, চেয়ার-টেবিল সাজাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই বরজলা মন্ডল অফিস থেকে প্রায় ২০–২৫ জন যুবক লাঠিসোটা হাতে নিয়ে হঠাৎই হামলা চালায়।
তাদের আঘাতে দুই ডেকোরেটর কর্মী গুরুতরভাবে আহত হন। এরপর তারা সরাসরি সিপিআইএম নতুননগর পার্টি অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। চেয়ার-টেবিল, মাইক সাউন্ড সিস্টেম, প্রচারসামগ্রীসহ পুরো অফিসকেই তছনছ করে দেওয়া হয়।
সিপিআইএম নেতৃত্বের অভিযোগ
স্থানীয় সিপিআইএম নেতা শ্যামল দে অভিযোগ করে বলেন,
“বিজেপি এখন জনগণ থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। মানুষের প্রতি তাদের আস্থা বা দায়বদ্ধতা আর নেই। সংগঠনের ভেতরেই নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। তাই আতঙ্ক সৃষ্টি করাই এখন তাদের রাজনীতি।”
তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন যে বরজলা মন্ডল অফিস থেকেই নির্দেশে এ হামলা চালানো হয়েছে। তার মতে,
“এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব পরিকল্পিত কর্মসূচি বানচাল করা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা।”
তবে শ্যামল দে দাবি করেন, সিপিআইএম কর্মীরা এখন আর ভয় পায় না। সাধারণ মানুষও প্রতিবাদে শামিল হচ্ছেন। ফলে এ ধরনের হামলা যত বাড়বে, ততই দল আরও প্রত্যয়ী হয়ে মানুষের সঙ্গে এগিয়ে যাবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গত সাড়ে সাত বছরে একই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। শুধু সিপিআইএম নয়, বিরোধী দলগুলির মিছিল, সভা থেকে শুরু করে নেতাদের ওপর হামলা কার্যত নিয়মিত চিত্রে পরিণত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে,
-
গণতান্ত্রিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
-
বিরোধী কণ্ঠ স্তব্ধ করার প্রচেষ্টা চলছে।
-
“ডাবল ইঞ্জিন সরকার” ও “সুশাসন”-এর দাবিগুলি বাস্তবে ব্যর্থতার দিকে যাচ্ছে।
উপসংহার
নতুননগরে সিপিআইএম অফিসে হামলার ঘটনাটি আবারও রাজ্যের রাজনৈতিক উত্তেজনাকে সামনে নিয়ে এল। বিরোধীদের অভিযোগ অনুযায়ী, এ ধরনের সহিংসতা রাজনীতিকে আরও বিষাক্ত করে তুলছে। তবে শাসক দলের তরফে এ নিয়ে কী বক্তব্য আসবে, তা এখনো দেখার অপেক্ষা।