হদ্রায় বনজমি দখল নিয়ে উত্তেজনা, রামপদ জমাতিয়ার হুমকি অভিযোগে ক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিনিধি – কাকরাবন।
বনজমি রক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব নতুন মোড় নিল। কাকরাবন বিধানসভার হদ্রা এলাকায় বন রক্ষাকারী কমিটির সঙ্গে কিছু উপজাতি অংশের মানুষের বিরোধে হঠাৎ উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযোগ, বাগমা কেন্দ্রের বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া ঘটনাস্থলে এসে গ্রামবাসীদের হুমকি দেন এবং বাঙালি পরিবারগুলিকে বনাঞ্চলে প্রবেশে বাধা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৮৯ সালে গঠিত “জীবন সাথী জেএফএমসি কমিটি” থেকে। প্রায় ৭০ হেক্টর জায়গায় গড়ে ওঠা এই বন রক্ষাকারী কমিটির অনুমোদন ছিল রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের বন দপ্তরের। গ্রামবাসীদের দাবি, বনজ সম্পদ রক্ষার মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার কাজ করে আসছে এই কমিটি।
কিন্তু সম্প্রতি কিছু উপজাতি পরিবার দাবি করে, ১৯৮০ সালের জুনের দাঙ্গার আগে এই বনাঞ্চল ছিল তাদের বসবাসের জায়গা। এরপর থেকে তারা জোরপূর্বক বনভূমি দখল করে রাবার বাগান গড়ে তোলার চেষ্টা করে। এতে আপত্তি তোলে বন রক্ষাকারী কমিটি। উত্তেজনা ক্রমশ বাড়তে থাকায় এলাকায় সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়।
এ পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ এলাকার প্রধান লক্ষ্মী মজুমদার, দুই পক্ষের প্রতিনিধি ও মহাকুমা বন আধিকারিকের উপস্থিতিতে সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু অভিযোগ, সেসময় বাগমা কেন্দ্রের বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া এসে উল্টো পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলেন। তিনি নাকি এলাকাবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “বাঙালিরা এখানে ঢুকতে পারবে না, গরুও চরাতে পারবে না।”
এই মন্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় মানুষজন। উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান। যদিও এলাকাটি জিতেন মজুমদারের বিধানসভা কেন্দ্রে পড়ে, স্থানীয়রা রামপদবাবুর এই হস্তক্ষেপ মেনে নিতে নারাজ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাগমা, খুপিলং, রাইয়াবাড়ী ও কিল্লা এলাকার মতো হদ্রাতেও অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছেন রামপদ জমাতিয়া।
ঘটনার পর থেকে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বনভূমি রক্ষা না কি জবরদখল—এই প্রশ্নে ফের অশান্ত হদ্রা।