খোদ শহর এলাকা থেকে এক যুবককে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে নগদ টাকা সহ স্বর্নালংকার ছিনতাই করে বৈদ্যুতিক পিলারে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। পরবর্তী সময়ে পুলিশের সাহায্য নিয়ে যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু আক্রান্ত যুবকের শারিরীক অবস্থা চূড়ান্ত অবনতি হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আক্রান্ত যুবককে রেফার করলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ছয় এপ্রিল রোববার বিকেলে যুবককে বহি:রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘটনা ঊনকোটি জেলার জেলাসদরের কৈলাসহর শহরের খোদ কাঁচেরঘাট এলাকায়। এই ঘটনায় গোটা কৈলাসহর শহর এলাকায় তীব্র আতংক বিরাজ করছে। অপরদিকে, আক্রান্ত যুবকের মা কৈলাসহর থানায় আক্রমণ কারীদের নামদাম দিয়ে লিখিত অভিযোগ করার প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করেনি। পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, কৈলাসহর শহরের কাঁচেরঘাট এলাকার বাসিন্দা ছাদেক আলী পেশায় কাঠ ব্যবসায়ী। ছাদেক আলীর ছেলে ২৫বছরের জাফরান উদ্দিন চৌধুরীও ছাদেক আলীর সাথে কাঠের ব্যবসা করে। প্রতিদিনের মতো গতকাল শনিবার জাফরান দোকানের ব্যবসা শেষ করে দোকান বন্ধ করে রাত সাড়ে আটটা নাগাদ স্কোরপিও গাড়ি চালিয়ে বাড়িতে যাবার সময় শহরের নবজাগ্রত ক্লাবের কাছে আসতেই জাফরানের গাড়ির পিছনে এবং সামনে মোট তিনটি বলেরো গাড়ি এসে জাফরান গাড়ি আটকে দিয়ে দশ পনেরো জন যুবক ধারালো দা এবং লোহার রড দিয়ে জাফরানের স্কোরপিও গাড়ির গ্লাস ভাংচুর করে এবং গাড়ির অন্যান্য জায়গাও ভাংচুর করে জাফরানকে জোর করে টেনে হিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে জাফরানকে বলেরো গাড়িতে তোলে জাফরানের হাত পা বেঁধে শহর থেকে বারো কিলোমিটার দূরে ইরানি গ্রামের একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে লোহার শিকল দিয়ে জাফরানকে বৈদ্যুতিক পিলারের সাথে বেঁধে জাফরানকে বেধড়ক মারধর করে এবং জাফরানের কাছে থাকা ৫লক্ষ টাকা ও গলার সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয়। অন্যদিকে জাফরানের ক্ষতিগ্রস্ত স্কোরপিও গাড়ি নবজাগ্রত ক্লাবের সামনে মূল রাস্তায় থেকে যায় এবং এলাকাবাসীরা জাফরানের বাবাকে খবর দেয় এবং ঘটনাস্থলে বাবা ছাদেক আলী এসে প্রতক্ষ্যদর্শীদের কাছ থেকে ছাদেক আলী জানতে পারে যে, ইরানি এলাকার কয়েকজন যুবক এসে জাফরানকে মারধোর করে তোলে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ছাদেক আলী ইরানি থানায় গিয়ে পুলিশকে সাথে নিয়ে জাফরানকে উদ্ধার করে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। জাফরানকে হকি স্টিক এবং লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে বলে জাফরান নিজেই জানায়। জাফরানের কান দিয়ে প্রচুর রক্ত বের হয় এবং মাথায় ও পেটে প্রচন্ডভাবে কিল, ঘুষি, লাথি দিয়েছে বলেও জানায়। জাফরানের শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক জাফরানকে ছয় এপ্রিল রোববার বিকেলে রেফার করে দেয়। জাফরানের উন্নত চিকিৎসার জন্য জাফরানের পরিবার জাফরানকে আসামের গৌহাটির এপোলো হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রোববার বিকেলে পাঁচটায় ঊনকোটি জেলা হাসপাতাল থেকে এম্বুলেন্স দিয়ে রওনা দিয়েছে। জাফরানকে গাড়ি থেকে নামিয়ে জাফরানের চোখ বেঁধে দিয়ে মারধোর করায় জাফরান চার পাঁচজনকে চিনতে পারলেও বাকী আক্রমণকারীদের চিনতে পারেনি বলেও জাফরান জানিয়েছে। ঘটনার সাথে সাথেই জাফরানের মা কৈলাসহর থানায় আক্রমণ কারীদের নামদাম দিয়ে লিখিত অভিযোগ করার পরও পুলিশ আক্রমণ কারীদের কাউকেই গ্রেফতার করেনি। থানায় লিখিত অভিযোগ করার পর বিভিন্ন মানুষ দিয়ে জাফরানকে আক্রমণ কারীরা জানায় যে, মামলা প্রত্যাহার না করলে জাফরানকে প্রানে মেরে ফেলা হবে এবং বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানায় জাফরান। এই ঘটনায় গোটা কৈলাসহর শহর এলাকায় তীব্র আতংক এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে।