শেষ পর্যন্ত পুজোর অনুমতি পেলো শহরের ৯ বনমালীপুর বিধানসভা এলাকার উদিচী ক্লাব। গত কিছুদিন যাবত শহরের মানুষের মুখে মুখে উদিচী ক্লাব। সম্প্রতি পুজোর চাঁদা নিয়ে ক্লাব এলাকার এক চিকিৎসক পরিবারের সাথে ঝগরা বিবাধের ঘটনা সামনে আসে। ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার ২৬ সেপ্টেম্বর। ঘটনায় ক্লাব এলাকার বাসিন্দা, চিকিৎসক প্রীতম দেবরায়ের অভিযোগ ক্লাব কতৃপক্ষের কয়েকজন তাদের বাড়িতে ঢুকে দেড় হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন, সে সময় চিকিৎসকের মা মনিকা দেবরায় বেড়িয়ে এলে ক্লাব কর্মকর্তারা তাদের সাথে অভব্য আচরনে লিপ্ত হন। ঘটনার ভিডিও মোবাইলে ধারন করতে গেলে চিকিৎসক প্রীতম দেবরায়ের ছোট ভাইকে মারধর করেন ক্লাব কর্মকর্তারা, ভাইকে বাচাতে গিয়ে তাদের আক্রমনের শিকার হন চিকিৎসক প্রীতম দেবরায় সহ ওনার মা। ঘটনার পর পরই চিকিৎসক পরিবার পুর্ব থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এই ঘটনার পর ক্লাব কতৃপক্ষও পালটা অভিযোগ করে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সে সময় ক্লাব সম্পাদক নিজে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও দাবী করেন। কিন্তু এই ঘটনা মহুর্তেই সামাজিক মাধ্যম সহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। চাঁদা নিয়ে কোনো প্রকারের জুলুম বরদাস্ত করা হবে না বলে আগেই হুশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এই ঘটনার পর পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ আধিকারিক সহ জেলা প্রশাসনও কঠোর মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসে। ঘটনার একদিন না পেরোতেই উভয় পক্ষ নিজেদের অবস্থান থেকে সড়ে কথা বলতে দেখা যায় । পুর্ব থানায় দাঁড়িয়ে চিকিৎসক প্রীতম দেবরায় বলেন, ক্লাব কতৃপক্ষ ও তাদের পরিবারের মধ্যে সুরাহা হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে। এখন আর কারুর প্রতি কারুর কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু দুপক্ষের মিমাংসার পড়েও প্রশাসন কঠোর হয়েই, উদিচী ক্লাবের পুজো করার অনুমতি বাতিল করে দেয়। এর পর থেকে শহরে অন্যান্য ক্লাব গুলির মধ্যেও কানাফুশি শুরু হয়ে যায়। ক্লাব কর্মকর্তারা স্থানীয় নেতা নেত্রীদের বাড়িতে দৌড়ঝাপ শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত শেষবারের মত সর্তক করে দিয়ে পুজো করার অনুমতি দেয় প্রশাসন। বুধবার পুজো করার অনুমতি পেয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে মিলিত হন উদিচী ক্লাব কতৃপক্ষ। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে ক্লাব সভাপতি সুবির দেববর্মা রাজ্য সরকার, পুলিশ প্রশাসন সহ জেলা প্রশাসনের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, রাজ্যের একটি অন্যতম পুরাতন সামাজিক সংস্থা উদিচী ক্লাব। সামাজিক দায়-দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রতিবছরই এলাকার সকল অংশের জনগণকে নিয়ে সার্বজনীন দূর্গোৎসবে মিলিত হয় ক্লাব । শান্তি, সম্প্রিতী আমাদের ক্লাবের অন্যতম অঙ্গীকার। কিন্তু একটি অপ্র্যতাশিত ঘটনায় এবছরের পুজোর অনুমতি বাতিল করা হয়েছিলো। তবে যাই হউক এলাকার অভিভাবক তথা সাংসদের প্রয়াসে ফের পুজোর অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। তিনি বকেন, ক্লাবের পক্ষ থেকে এলাকার সকল অংশের অভিভাবক ও এলাকাবাসীদের নিয়ে উপস্থিত সকল সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে রাজ্যবাসীকে এবং পুলিশ প্রশাসনকে আস্বস্ত করতে চাই যে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও উদিচী ক্লাবের দূর্গোৎসব সকলকে নিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে সু-সম্পন্ন হবে এবং এলাকায় শান্তি, সম্প্রিতী বজায় রাখতে ক্লাব কর্তৃপক্ষ সজাগ দৃষ্টি রাখবে।