সরকারি আধিকারিকের উপর নৃশংস হামলা — প্রশাসনিক নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন
ত্রিপুরার প্রশাসনিক মহল ফের কেঁপে উঠল এক ভয়াবহ ঘটনায়। বুধবার রাতে কুমারঘাটে সরকারি কোয়ার্টারের ভেতরে প্রবেশ করে ওয়াটার রিসোর্স (W.R) দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রণজয় দেববর্মার উপর অতর্কিত হামলা চালায় একদল দুষ্কৃতী। দায়িত্বে থাকা এক সরকারি আধিকারিকের উপর এমন নির্মম আক্রমণ প্রশাসনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, ফটিকরায়ের রাইসিং পাড়া এলাকার এক প্রকল্পের বিল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দপ্তর ও ঠিকাদার গোষ্ঠীর মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। সেই বিবাদেরই ভয়ঙ্কর পরিণতি দেখা দেয় বুধবার রাতে। প্রায় এক ডজন দুষ্কৃতী বাইকে চেপে সরকারি কোয়ার্টারে হানা দেয়, দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে ইঞ্জিনিয়ারের উপর বেধড়ক মারধর চালায়, মোবাইল ভাঙে ও বাড়ি তছনছ করে দেয়।
চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দিলে কুমারঘাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত আধিকারিককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেফতার না করায় প্রশাসনিক তৎপরতা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন উঠেছে।
ওয়াটার রিসোর্স দপ্তরের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার (S.E.) শ্যামল কুমার দাস বলেন, “এই হামলাটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। একজন সরকারি আধিকারিক যদি নিজের কোয়ার্টারেও নিরাপদ না থাকেন, তবে এটি গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থার উপর আঘাত।”
স্থানীয় মহলে ঘটনাটি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাগরিক সমাজ প্রশ্ন তুলছে — যদি সরকারি আধিকারিকই নিরাপদ না হন, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?
ত্রিপুরার প্রশাসনিক কাঠামোর ভিতরে ঠিকাদার গোষ্ঠীর প্রভাব, বিল সংক্রান্ত অস্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক ছায়ার অভিযোগ নতুন নয়। ফলে এই হামলা শুধু একজন আধিকারিকের উপর আঘাত নয় — এটি রাজ্যের প্রশাসনিক ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার উপর এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।
শেষ প্রশ্ন রয়ে যায় — সরকারি কোয়ার্টারও কি আর নিরাপদ নয়? সুশাসনের প্রতিশ্রুতি কি শুধুই কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ?