পহেলগাম-কাণ্ডে সরকারকে পাশে চায় কংগ্রেস

3 Min Read

কেন্দ্রকে সাহায্যের বার্তা কংগ্রেসের ঘটনার আপৎকালীন তীব্রতা কিছুটা থিতিয়ে এলে পহেলগাম-কাণ্ড নিয়ে গেরুয়া শিবির তীব্র কোনও ভাষ্য তৈরি করবে— এ দিন সমাজমাধ্যমে বইতে শুরু করা মেরুকরণ ও বিদ্বেষের হাওয়া দেখে এমনটাই আশঙ্কা করছে কংগ্রেস। আর তাই গত রাতে ঘটনার পরে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী মোদী সরকারকে আক্রমণ করলেও, আজ স্বর অনেকটাই নামিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বার বার জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে ‘রাজনীতি’ করতে চান না তাঁরা। বরং দেশের এই বিপদে সরকারের পাশেই রয়েছেন। কংগ্রেসের দাবি ছিল, অবিলম্বে সব তথ্য সংগ্রহ করে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুক কেন্দ্র। রাতে সরকারের তরফেও জানানো হয়েছে, কালই সর্বদল বৈঠকের ডাক দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।বৃহস্পতিবার কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তার আগে বুধবার সকালেই বেঙ্গালুরুতে সাংবাদিক বৈঠক করে খড়্গে বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত কাল কাশ্মীরে পৌঁছোনোর পরে তাঁর সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।’’ তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, সফরের সময়ে নিহতদের পরিবার-পরিজন ও অন্য পর্যটকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল শাহকে। তাই শাহের সঙ্গে তাঁদের কথাবার্তার একটি ভিডিয়োয় শব্দ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি বিরোধীদের।জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের সহযোগী দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লার সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে বলে জানান খড়্গে। সঙ্কটের এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস ‘রাজনৈতিক ফায়দার’ জন্য বিতর্ক উস্কে দেওয়ার পক্ষপাতী নয় বলেও বার্তা দিয়েছেন খড়্গে। তিনি বলেন, ‘‘এখন রাজনৈতিক ঐক্যের সময়। গোটা জাতি যখন শোকস্তব্ধ, তখন কারও ব্যর্থতা চিহ্নিত করার চেষ্টা উচিত নয়। আমরা সবাই এই বিষয়ে এক, এই বার্তা দিতে চাই।’’ সন্ত্রাসবাদ উপড়ে ফেলতে কংগ্রেস যে কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা করবে, সে কথা জানিয়ে খড়্গে বলেন, ‘‘অমরনাথ যাত্রার আর কিছু দিন মাত্র বাকি। আমরা চাই, কেন্দ্র তার সমস্ত শক্তি ব্যয় করে এলাকায় শান্তি ফেরাক। দোষীদের শাস্তি দিক।”তৃণমূলের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে মুখ খুলেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারকেও আক্রমণ করেছেন অভিষেক। আজ রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “কেন্দ্র সর্বদাই কাশ্মীরকে নিরাপদ এবং শান্তিপূর্ণ জায়গা হিসাবে সুসজ্জিত দেখানোর চেষ্টা করেছে। আর কয়েক দিন পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ওখানে।”তবে একটি জাতীয় দল হিসেবে কংগ্রেস গোটা বিষয়টির মধ্যে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বলেই সূত্রের খবর। বিজেপি বরাবরই চেষ্টা করে গিয়েছে, বিভিন্ন জাতের ঊর্ধ্বে উঠে হিন্দুত্বের মঞ্চ প্রতিষ্ঠা করতে, যাতে ধর্মীয় মেরুকরণের পুরো সুবিধাটা নেওয়া যায়। সামনেই রয়েছে বিহারের ভোট, যেখানে হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন জাতপাতের অঙ্ক রয়েছে ভোটব্যাঙ্কে। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় মেরুকরণের জন্য ঝাঁপিয়েছে বিজেপি।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version