🌺 ঐতিহ্য, তন্ত্র ও ভক্তির মিলনমেলা — প্রতাপগড় ঋষিপাড়ায় ৭০তম চড়ক পূজা
ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার প্রতাপগড় ঋষিপাড়ায় এই বছর অনুষ্ঠিত হলো ৭০তম ঐতিহ্যবাহী চড়ক মেলা — যা স্থানীয় সংস্কৃতির এক জীবন্ত নিদর্শন। এই মহামেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল মহাদেবের পূজা, তন্ত্রসাধনা ও চরম শারীরিক কীর্তিব প্রদর্শন।
📍 স্থান: প্রতাপগড় স্কুল মাঠ
📆 আয়োজনের বর্ষ: ৭০তম বছর
প্রতিবছরের মতো এবারও চড়ক পূজাকে কেন্দ্র করে এলাকা জুড়ে উৎসবের আমেজ। ছোট-বড়, যুবা-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে হাজারো ভক্তের ভিড় জমে চড়ক গাছ ঘোরানো, ধুনুচি নৃত্য এবং নানা রকম তান্ত্রিক আচার-অনুষ্ঠানে।
🕉️ তন্ত্রসাধনা ও আধ্যাত্মিকতা:
চড়ক পূজার মূল কেন্দ্রবিন্দু হল মহাদেবের পূজা ও তন্ত্রসাধনা। এখানে বিশ্বাস করা হয়, এই সাধনার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক শক্তি অর্জন করা যায়, অসুস্থতা দূর হয় ও জীবনে সুখ-শান্তি নেমে আসে।
তান্ত্রিক পুরোহিতদের তন্ত্র-মন্ত্র উচ্চারণ, ধূপ ধুনো ও বেলপাতা-গঙ্গাজল সহযোগে পূজা সম্পন্ন হয়। উপস্থিত ভক্তরা একাগ্রচিত্তে প্রার্থনায় অংশ নেন।
🎪 দর্শনীয় শারীরিক কীর্তব ও চরক গাছ ঘোরানো:
চড়ক মেলার সবচেয়ে চমকপ্রদ অংশ হলো চরক গাছ ঘোরানো এবং বিভিন্ন অদ্ভুত ও শারীরিক সহিষ্ণুতার কীর্তিব প্রদর্শন। কিছু ভক্ত মহাদেবকে সন্তুষ্ট করতে শরীরে বঁড়শি গেঁথে নিজেকে চরক গাছে বেঁধে আকাশে ঘোরেন — এক ঐতিহ্যবাহী কিন্তু চরম নিষ্ঠার প্রতীক এই আচার।
এছাড়াও, ভক্তরা তলোয়ার, আগুন, কাঁটা বা কাচের উপর হাঁটার মতো শারীরিক কীর্তব দেখান, যা উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে ভক্তি, বিস্ময় এবং কৌতূহলের সৃষ্টি করে।
🙏 একতা ও ঐতিহ্যের উৎসব:
এই মেলা শুধু পূজা বা তন্ত্রসাধনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় — এটি এক সামাজিক মিলনক্ষেত্র, যেখানে ধর্ম, সংস্কৃতি ও মানুষের একতা প্রতিফলিত হয়। পাড়ার যুব সমাজ, প্রবীণ ব্যক্তিরা মেলার আয়োজন ও পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।
📸 মেলায় ছিল আরও:
- হস্তশিল্পের দোকান
- স্থানীয় খাবারের পসরা
- শিশুদের জন্য নাগরদোলা ও খেলনা
- সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কীর্তন
ঐতিহ্য ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক এই চড়ক মেলা শুধু এক দিনের উৎসব নয় — এটি একটি সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার, যা আগামী প্রজন্মের কাছে আমাদের ধর্মীয় রীতিনীতির গৌরবময় পরিচয় বহন করে।
আপনার এলাকায় এমন ঐতিহ্যবাহী মেলা হয়? জানাতে ভুলবেন না কমেন্টে! #ChorokMela #TripuraTradition