সুশাসনের জন্য লড়াই: অসহায় মায়ের কাহিনী ঘটনা চড়িলাম

Charilam Tripura News | Planet Tripura

4 Min Read
Disclosure: This website may contain affiliate links, which means I may earn a commission if you click on the link and make a purchase. I only recommend products or services that I personally use and believe will add value to my readers. Your support is appreciated!

মেয়ের উপর নির্যাতন কারীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে করজোড়ে কাতর আবেদন অসহায় মায়ের


Planet Tripura News :04.10.2024

মেয়ের উপর নির্যাতন কারীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাতজোড় করে কাতর আবেদন এক অসহায় মায়ের। ঘটনাটি চড়িলাম আড়ালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এক বৃদ্ধ অসহায় মায়ের চোখের জল যেন এটাই প্রমাণ করছে বিচারের বাণী কাঁদে নিরবে নিভৃতে। চড়িলাম আড়ালিয়া এলাকার অসহায় বৃদ্ধ মা নার্গিস বেগম এবং তার মেয়ে মর্জিনা খাতুন। ২০১৪ সালে মুসলিম ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসারে বিয়ে দেওয়া হয় মর্জিনা খাতুনকে। একই গ্রামের মুকেশ নবীর সঙ্গে। বিয়ের পর প্রথম কিছুদিন ভালোই চলছিল তাদের সংসার। হঠাৎ করে শুরু হয় সংসারে অশান্তি। টাকার জন্য বারবার গৃহবধূ মর্জিনা খাতুন কে চাপ দিত তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বেশ কয়েকবার তাকে মারধর ও করা হয়। মেয়ের সুখের চিন্তা করে অসহায় তার মা বাবা এবং ভাই মর্জিনা খাতুন এর শশুর বাড়িতে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়েছিল। টাকা দেওয়ার পর এক দুই বছর ভালো ছিল। এরপর আবার শুরু হয় টাকার জন্য মর্জিনা খাতুনকে নির্যাতন। প্রতিনিয়ত টাকার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মারধর করত নির্যাতন করত। গত ২১ সেপ্টেম্বর রাত্রিবেলায় প্রচন্ডভাবে মারধর করে মুখ বেঁধে ঘরের মধ্যে দরজা বন্ধ করে রেখে দেওয়া হয় মর্জিনা খাতুনকে। ২২ সেপ্টেম্বর জোর করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়। ঘরের মধ্যে কাতরাতে থাকে মর্জিনা। শশুর বাড়ির লোকজন ফিরেও তাকায় নি। শেষমেষ খবর পেয়ে মর্জিনার ভাই ফারুক ইসলাম বাবা জামাল হোসেন এবং মা নারগিস বেগম দৌড়ে ছুটে যায় মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে। গাড়ি রিজার্ভ করে তার মা বাবা ভাই তাকে নিয়ে যায় বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন ফিরেও তাকায়নি। শেষ পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রেফার করে দেওয়া হয় হাঁপানিয়া হাসপাতালে। হাপানিয়া হাসপাতাল থেকে দুইদিন পূর্বে বাড়িতে আসে মর্জিনা। তার রয়েছে আট বছরের একটি শিশুসন্তান আরিফুল ইসলাম। সে আনন্দমার্গ স্কুলে পড়াশোনা করে। সে কিছুই বুঝে না। মা এবং বাবা কাউকে দেখছে না বেশ কয়েকদিন। মায়ের এরকম অবস্থায় সে এবার পরীক্ষা দিতে পারেনি। শিশুটি সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে মায়ের জন্য। ২২ সেপ্টেম্বর বিশালগড় মহিলা থানায় পাঁচ জনের নাম ধাম দিয়ে মামলা করে মর্জিনা খাতুনের ভাই ফারুক ইসলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিশালগড় মহিলা থানা মুকেশ নবীপিতা হোসেন মিয়াহোসেন মিয়াপিতা মৃত আলি মিয়াআলেয়া বেগমস্বামী হোসেন মিয়াহেলাল মিয়া পিতা হুসেন মিয়ারুমেনা বেগমস্বামী হেলাল মিয়া এই পাঁচ জন আসামির মধ্যে একজনকেও আটক করেনি বিশালগড় মহিলা থানার পুলিশ। এবং মামলাটি এখন পর্যন্ত রেজিস্টার্ড ও করেনি বিশালগড় মহিলা থানার পুলিশ। বিরাট অংকের টাকা খেয়ে আসামি আটক করছে না এবং মামলাটিও রেজিস্টার্ড করছে না বিশালগড় মহিলা থানার পুলিশ। শুক্রবার দিন সকালবেলা বাড়ির উঠোনের মধ্যে পাড়া-প্রতিবেশী এবং মেয়েকে নিয়ে দাঁড়িয়ে বিশালগড় মহিলা থানার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অসহায় মা নার্গিস বেগম। তিনি আরো জানান অত্যন্ত গরিব পরিবার তারা। অনেক কষ্ট করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের পরেও মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বহুবার কষ্ট করে টাকা পয়সা দিয়েছেন।। এরপরেও প্রতিনিয়ত চলছে তার মেয়ের উপর শারীরিক মানসিক নির্যাতন। শেষ পর্যন্ত তার মেয়েকে মুখে বিষ ঢেলে দেয় এবং তার মেয়ের জামাই মুকেশ অন্য আরেক বিবাহিত দুই সন্তানের জননীকে ঘরে তুলে আনে। বিশালগড় মহিলা থানায় জানানোর পরেও তারা কিছুই করেনি। কারণ মুকেশ নবীর পরিবার অর্থনৈতিক ভাবে এবং রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট ক্ষমতাশালী। যার ফলে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এ হেন অবস্থায় মেয়ের উপর নির্যাতনকারীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে শুক্রবার দিন সকাল বেলা চোখের জল ফেলে হাতজোড় করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়েছেন এক অসহায় মা নার্গিস বেগম। তার চোখের জলে এবং কান্নায় গোটা গ্রামের মানুষ এক এক করে সকালবেলা তার বাড়ির সামনে আসতে শুরু করে। গ্রামের মহিলারা ও জানিয়েছেন অত্যন্ত জঘন্য এবং অন্যায় কাজ করেছে মুকেশ নবী এবং তার বাবা-মা সহ পরিবারের লোকজন। তাদের কঠোর শাস্তি হোক চাইছে গোটা গ্রামের মানুষ।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version