ছেলেকে বিষ খাওয়ানোর দীর্ঘ এক মাস মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মঙ্গলবার রাতে আনুমানিক 8 ঘটিকার সময় বক্সনগর হাসপাতালে মৃত্যু হয় ছেলের। বুধবার তার মৃতদেহ কবরস্থ করার প্রাক মুহুর্তে পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে বক্সনগর মর্গে নিয়ে আসা কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
বক্সনগর থেকে প্রায় ৩৮ বছর আগে বিশ্রামগঞ্জে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন বিল্লাল মিয়া।সেখানে তিনি লিপনা বেগমকে সামাজিক রীতিনীতি মেনে বিবাহ করেন। কিন্তু বিবাহের পর,লিপনা বেগমের অবৈধ কার্যকলাপে অতিষ্ট হয়ে বিল্লাল মিয়া তার পরিবার নিয়ে বক্সনগর নয়নজলা গ্রামে পিছলা গাছ চৌমুনী এলাকায় গত ১ বছর আগে বাড়ি করেন।
বিল্লাল মিয়া এবং লিপনা বেগমের ছেলে দুলাল মিয়া তার মায়ের অবৈধ কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে পেরে প্রতিবাদ করেন। এরপর লিপনা বেগম তার ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তার ভাইয়ের সহযোগিতায় গত ১২আগস্ট দুলালকে গ্যাসের ঔষধ বলে দুধের সাথে বিষ খাইয়ে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত দুলালকে বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন এবং জিবি হাসপাতালে রেফার করেন। জিবি হাসপাতালে দীর্ঘ ১০ দিনের চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে দুলাল বাড়ি ফিরে আসেন।
দুলাল ও তার বাবা বিল্লাল মিয়া মায়ের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ ওঠে, বিষ খাওয়ানোর পর লিপনা বেগম পালিয়ে যান। পুলিশের অনুসন্ধান ও তদন্তের পর, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে কলমচৌড়া থানার পুলিশ লিপনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে এবং সোনামুড়া আদালতে পেশ করেন। বর্তমানে লিপনা বেগম জেল হাজতে রয়েছেন।
এক মাস পর,১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে দুলাল হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে পুনরায় বক্সনগর সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত আনুমানিক ৮টার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের লোকজন ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে। তবে, বুধবার সকাল ১১টায় তার দাফনের পূর্বমুহূর্তে পুলিশ কফিনবন্দী মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। লিপনা বেগমের গ্রেপ্তার ও আদালতে হাজির করার ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে এলাকার মানুষজনের মধ্যে উদাসীনতা এবং অসন্তোষ রয়েছে, কারণ তারা মনে করছেন যে প্রশাসনের পদক্ষেপ যথাযথ ছিল না।
এই ঘটনাটি বক্সনগর অঞ্চলে একটি মর্মান্তিক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে এলাকাবাসীর প্রশ্ন থাকলেও, মামলার প্রক্রিয়া চালু রয়েছে এবং পাষণ্ড মা লিপনা বেগমের বিচারিক প্রক্রিয়ার অপেক্ষা করছে পুরো এলাকা।