পুকুর ছাড়াই মাছচাষ করার কথা ভাবছেন ? তাহলে আর দেরি কেন ?

3 Min Read

পুকুর ছাড়াই মাছচাষ করার কথা ভাবছেন ? তাহলে আর দেরি কেন ?

আদি যুগ থেকেই পুকুরে মাছ চাষ তো বহুদিন ধরেই চলছে। কিন্তু যদি পুকুর ছাড়াই চাষ করা যায়? তাহলে কেমন হয়? সেটা কী সম্ভব? মৎস্যবিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বিশেষ পদ্ধতিতে কৃত্রিম ভাবেও মাছ চাষ করা যায়। সেই পদ্ধতির নাম বায়োফ্লক কৃত্রিমভাবে জলাশয় তৈরি করে, নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতিতে মাছ চাষ করার পদ্ধতি।

ওই জলাশয়ে বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে দূষিত বর্জ্য পদার্থকে মাছের খাদ্যে রূপান্তরিত করা যায়। এই পদ্ধতিতে পুষ্টিগুণ অপরিবর্তিত রেখেই জলাশয়ের জলও পরিষ্কার রাখা যায় । এই পদ্ধতিতে জলাশয়ের জলে বিশেষ ধরনের অণুজীব, ব্যাকটেরিয়া, শ্যাওলা তৈরি হয়। সেগুলিই মাছের খাদ্য ও পুষ্টির জোগান দেয়। জৈবপদ্ধতিতে বর্জ্যপদার্থ পুনর্বীকরণ করে এই মাছ চাষ করা হয় বলে বর্জ্য তৈরি হওয়ার সমস্যা থেকে বাঁচা যায়। ট্যাঙ্ক বা চৌবাচ্চা তৈরি করে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা যায়। ঢালাই করে কংক্রিটের ট্যাঙ্ক বানানো যায় ৷

প্লাস্টিকের ড্রাম বা প্লাস্টিকের তৈরি চৌবাচ্চাতেও এই চাষ করা যায়। তার মধ্য জল রেখে, বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে জল প্রস্তুত করতে হবে। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জলের অম্লত্ব, ক্ষারত্ব অর্থাৎ পিএইচ মাত্রা বজায় রাখতে হবে। মাছের প্রকারভেদে এই মাত্রার বদল হবে। এই পদ্ধতির মাছ চাষে অল্প জায়গায় বহু পরিমাণ মাছ থাকে। সেই কারণে জলে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । এক্ষেত্রে কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে চৌবাচ্চায় অক্সিজেন সরবরাহ করতে হয় । নয়তো অক্সিজেনের অভাবে মাছ মারা যেতেও পারে। চৌবাচ্চার জল বদল করার প্রয়োজন তেমন হয় না। ফলে অল্প পরিমাণ জমি ও অল্প সংখ্যক চৌবাচ্চাতেই লাভজনক ভাবে মাছ চাষ করা যেতে পারে । তবে চৌবাচ্চার জলের গুণমানের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে । জলের মান ও প্রয়োজনীয় উপাদান ঠিকমতো রয়েছে কিনা তার জন্য নিয়মিত নজরদারি প্রয়োজন হয় । এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার আগে প্রশিক্ষণ অত্যান্ত জরুরি। মৎস্যবিশেষজ্ঞ বা প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই বিষয়ে সাহায্য পাওয়া যায় । বায়োফ্লক পদ্ধতিতে নানা রকম বড় মাছের পাশাপাশি ছোটমাছের চাষ করা যেতে পারে। বিশেষ করে জিওল মাছ যেমন শিঙি, মাগুরের চাষ করা যায়। ছোট চিংড়ির চাষ করা যায়। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে অনেকে তেলাপিয়া মাছ চাষও করেন। বিশেষ নজরদারির মাধ্যমে ছোট রুইয়ের চাষও করা যায় এই পদ্ধতিতে। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছচাষ অত্যন্ত লাভজনক একটি উপায়। পুকুর বা জলাশয় লিজ নেওয়ার সমস্যা থাকে না। ছোট জায়গায় চাষ শুরু করা যায়। লাভের সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে পুরোটাই নির্ভর করে ঠিক নিয়ম মেনে চাষ করা হচ্ছে কিনা তার উপর। এই পদ্ধতিতে মাছ খুব দ্রুত পরিমাণে বাড়ে। যার ফলে তুলনায় কম সময়ে বাজারে বিক্রির জন্য তৈরি হয়। ঠিকমতো নজর না রাখলে চৌবাচ্চার জলে রাসায়নিক পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে যার কারণে মাছ মারাও যেতে পারে ।

 

তো আর চিন্তা কিসের , বাড়িতেই এবার থেকে মাছের চাষ করে স্বনির্ভর হয়ে যান।

TAGGED:
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version