আগরতলায় ডিওয়াইএফআই-র যুবতী মিছিল, ডিজিকে ডেপুটেশন
নারী নির্যাতন, বধু হত্যা, ধর্ষন, গণ ধর্ষনের মতো নারী সংক্রান্ত অপরাধের পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতির অভিযোগ তোলে বুধবার রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিলে শামিল হন বামপন্থী যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই এর যুবতী ও মহিলারা। মেলারমাঠ ছাত্র যুব ভবন থেকে বের হয়ে এই বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয় রাজ্য পুলিশের সদর দপ্তরের সামনে। সেখানে ডিওয়াইএফআই এর এক প্রতিনিধি দল পুলিশের মহানির্দেশকের নিকট ডেপুটেশন প্রদান করে। মিছিল থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি পলাশ ভৌমিক বলেন, বেটি বাচাও বেটি পড়াও এর কথা বলে বিজেপি। অন্যদিকে এই বিজেপি সরকারের সময়ে রাজ্যে প্রতিদিন, শিশু থেকে শুরু করে যুবতী এমনকি পঞ্চাশ ষাটোর্ধ মহিলারা পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। গত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর এই ছয় মাসে রাজ্যের থানাগুলিতে ১২৯৩ টি নারী সংক্রান্ত অপরাধ লিপিবদ্ধ হয়েছে। তার বাইরে এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটছে যেগুলি, শাসক দলের নেতা কর্মীদের চাপে থানা পর্যন্ত যায় না। স্কুল ছাত্রী থেকে শুরু করে বৃদ্ধ মহিলারা ধর্ষন গণ ধর্ষনের শিকার হচ্ছেন। এসব ঘটনার বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই শাসক দলীয় দুর্বৃত্তদের নাম উঠে আসছে। পুলিশ প্রশাসন দুর্বল এমনটা নয়, এই পুলিশইতো রাজ্যের সন্ত্রাসবাদ দমন করেছে, এই পুলিশ বাবুরাই একটা শান্তি সম্প্রতির বাতাররন রাজ্যে কায়েম করেছিলেন। কিন্তু আজকে তারা কেন ব্যার্থ। আসলে পুলিশ বাবুদের হাত পা বাধা বিজেপির মন্ডল নেতাদের রশিতে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পুলিশ কর্তাদের হাতের পুতুল বানিয়ে রেখেছে বিজেপি। ফলে পুলিশের ঘুম ভাঙ্গাতে এবং শাসক দলের দুর্বৃত্তদের হুশিয়ারি দিতে মাঠে নেমেছেন বামপন্থী যুবতী বোনেরা। আগামী দিনে নারী ঘটিত কোনো অপরাধ দেখতে পেলে রাজনৈতিক রঙ চং না দেখে সকলে মিলে এর বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পরার আহ্বান জানান ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি পলাশ ভৌমিক। অন্যদিকে ডিওয়াইএফআই কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা নিলাঞ্জনা রায় বলেন, রাজ্যে শিক্ষক, শিল্পী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, পুলিশ সহ সাধারন মানুষ সকলে আক্রান্ত। রাজ্য জুড়ে চলছে জঙ্গলের রাজত্ব। দিনের পর দিন এই আক্রমনে তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাফিয়া সন্ত্রাস, তোলাবাজি, চাঁদাবাজি রাজ্যে নতুন করে ঝাকিয়ে বসেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, রাজ্যে ছাত্রী, যুবতী, মহিলাদের উপর হিংসা, আক্রমন ক্রমবর্ধমান। একমকি রাজধানীর প্রাণ কেন্দ্রেও আজকাল ছাত্রী, যুবতী, মহিলারা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে মোহনপুরে ২২ বছরের এক তরুনীকে গনর্ধষন করে এক মাঠের মাঝখানে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়। এই বিভৎসতম ঘটনার আজ পর্যন্ত বিচার হয়নি। এরকম অসংখ্য ঘটনায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন না করার ফলে, অপরাধীরা আজ খুল্লাম খুল্লা ঘুরছেন। আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছে তারা । যার ফলে আইন-শৃঙ্খলা সম্পূর্নভাবে ভেঙে পরেছে। পাশাপাশি গোটা রাজ্য নেশায় ডুবে যাচ্ছে। রাজ্যের প্রতিটি গলিতে চলছে নেশার অবাধ বাণিজ্য। নেশায় আসক্ত হয়ে হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। গোটা সমাজ আজ ধুৎসের মুখামোখি। নেশাকারবারিদের বিরুদ্ধে নেই কোন কঠোর পদক্ষেপ। নেশাকারবারির গাড়ি কমলচোরা থানার পুলিশ অফিসারকে মেরে ফেলল সেটার বিরুদ্ধে পর্যন্ত কোন কঠোর পদক্ষেপ নেই। এ এক অরাজকতা চলছে। এরই প্রতিবাদে সরব হয়েছে ডিওয়াইএফের নারী নেতৃত্বরা। তাঁদের দাবি, রাজ্যে আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠা করা, ছাত্রী, যুবতী, মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা, নেশা বাণিজ্য বন্ধ করা ও নেশাকারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা। আর এই দাবীতে এটাই শেষ নয়, আগামী দিনে বিজেপির দুর্বৃত্ত সহ নারীদের উপর যারাই কু দৃষ্টি রাখবেন তাদের যোগ্য জবাব দেবে নারী সমাজ। আর পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে যারা মেরুদন্ড বিক্রি করে বসে আছেন তাদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ ঘোষনা করবে এরাজ্যের আপামর জনগন বলেও মত ব্যক্ত করেন নিলাঞ্জনা রায়।